আন্তর্জাতিক

কেজরিওয়ালের জয়ের পেছনে দশ ছাত্র


গত মঙ্গলবার বিপুল ব্যবধানে দিল্লির ভোটে জয়লাভ করে আম আদমি পার্টি। এর আগে দিল্লির গণতান্ত্রিক ভোটাভুটির ইতিহাসে কোনো পার্টিই এরকম বিজয় লাভ করেনি। মোট ৭০টি আসনের মধ্যে আম আদমি পার্টি মোট ৬৭টি আসনে জয়লাভ করে। এই জয়ের মধ্য দিয়ে একদিকে যেমন বিজেপি অথবা মোদি সরকারের দুর্গে ফাটলের সূচনা অন্যদিকে ভারতের গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো। তবে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টির এই জয়ের পেছেনে যেমন কাজ করেছে জনসমর্থন তেমনি এই জনসমর্থন আদায়ে কাজ করেছেন দশজন ছাত্র।

গত বছরের নভেম্বর মাসে আম আদমি পার্টি একটি গবেষণা শাখা উন্মোচন করে। এই শাখার কাজ ছিল প্রতিদিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যাওয়া সকল স্ট্যাটাস এবং জনগণের মতামত জরিপ করা। এই মতামতের ভিত্তিতেই আম আদমি পার্টি দিল্লির জনগণের জন্য নির্বাচনী ইশতেহার তৈরি করে। আর এই বিশাল কাজটি করেন মুম্বাইয়ের আইআইটি বিশ্ববিদ্যালয়ের দশ ছাত্র। জনগণের দাবি দাওয়ার প্রেক্ষিতেই পানি, বিদ্যুৎ, নারীদের নিরাপত্তার জন্য ওয়াইফাই ইত্যাদি বিষয়গুলো যুক্ত হয় আম আদমির ইশতেহারে।

ওই ছাত্ররা তাদের কাজে সুবিধার্থে একটি অ্যালগরিদম তৈরি করেছিল। যার মাধ্যমে জনগণের বক্তব্য এবং জনমত সম্পর্কে খুব সহজেই জানতে পারে আম আদমি পার্টি। এই দশ ছাত্রের মধ্যে একজন দিবায়নাক। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভিকে তিনি জানান, ‘আমাদের মূল লক্ষ্যই ছিল মানুষের আবেগপূর্ণ বক্তব্যগুলোকে আমলে আনা। আমরা একটা সফটওয়্যার বানিয়েছি যা একাধারে এক হাজার আম আদমি, বিজেপি এবং অন্যান্য সমর্থকদের বক্তব্য সংগ্রহ করতে পারে। এরপর সেই তথ্য থেকে আমরা প্রতিদিন যাচাই-বাছাই এবং জরিপ প্রস্তুত করতাম। আমাদের কাছে প্রিন্ট করা কিংবা মিডিয়াতে যাওয়ার মতো অর্থ ছিল না। ছিল একমাত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। সেটাকেই কাজে লাগিয়েছি আমরা।’

ভারতে বর্তমানে প্রায় ১০০ মিলিয়ন মানুষ ফেসবুক এবং ৩৩ মিলিয়ন মানুষ টুইটার ব্যবহার করে। এই দুই শ্রেনিকেই ভোটের রাজনীতিতে অন্যতম ভোটব্যাংক হিসেবে দেখা হয়। বিশেষ করে যারা বয়সে তরুণ তাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেখা হয়। আর এই সুযোগটিই গ্রহন করেছেন আম আদমি প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে ব্যবহার করেছেন নির্বাচনী হাতিয়ার হিসেবে। বিজেপি কিংবা কংগ্রেস কেউই আম আদমি পার্টির সমর্থকদের সঙ্গে কোনো বাহাসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে টিকে উঠতে পারেনি আজ অবধি।