স্বাস্থ্য

সতর্ক হোন বিষণ্ণতা থেকে


আমাদের দেশে শারীরিক সমস্যার সঠিক চিকিৎসাও করা হয় না অনেক সময়েই। শারীরিক সমস্যা একেবারে শেষ পর্যায়ে না গেলে অনেকেই চিকিৎসা করার উদ্যোগ নেন না। সুতরাং মানসিক রোগের চিকিৎসার প্রশ্ন অনেক পরেই আসে। বিষণ্ণতাকে কেউই গুরুত্বের সাথে নেন না। অনেকেই মনে করেন সাধারণ মন খারাপের অনুভূতিটাই বিষণ্ণতা। সত্যিকার অর্থে বিষণ্ণতাকে আমরা যতোটা সহজ ভেবে থাকি বিষণ্ণতা ঠিক ততোটা সহজ কোনো সমস্যা নয়। বিষণ্ণতা রোগটির সম্পর্কে এমন অনেক তথ্য রয়েছে যার সম্পর্কে আমাদের কোনো ধারনাই নেই। আর এ কারণেই অনেক সময় ভুল পদক্ষেপ বিষণ্ণতায় আক্রান্ত রোগীকে মৃত্যু মুখে ঠেলে দিয়ে থাকে। সুতরাং সতর্ক হোন এবং জানুন বিষণ্ণতা রোগ সম্পর্কে।

১) বিষণ্ণতা শুধুমাত্র মন খারাপ হওয়া বা খারাপ লাগার অনুভূতি নয়। বিষণ্ণতায় আক্রান্ত ব্যক্তি মন খারাপের চাইতেও বেশি অনুভব করেন হতাশা, দুশ্চিন্তা, রাগ, নিজের মতো মূল্য না খুঁজে পাওয়া, জীবনের অর্থ না পাওয়া ইত্যাদি যা অনেক সময় আত্মহত্যার ইচ্ছায় পরিণত হয়। আর এই ধরণের সমস্যায় বিশ্বের প্রায় ১০০ মিলিয়ন মানুষ ভুগে থাকেন।

২) বিষণ্ণতা শুধুমাত্র মানসিক দিক দিয়েই প্রকাশ পায় না, বিষণ্ণতার লক্ষণ প্রকাশ পায় শারীরিক দিক দিয়েও। বিষণ্ণতায় আক্রান্ত মানুষেরা অনেক বেশি দুর্বলতা, সারাক্ষণ ক্লান্ত থাকা, দীর্ঘমেয়াদী ব্যথা, মাথাব্যথা ও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভোগেন।

৩) কোনো কিছুতে মনোযোগ দিতে না পারা, সবকিছু ভুলে যাওয়ার সমস্যা, সবসময় বিরক্ত থাকা, সবসময় ক্ষুধা লেগে থাকা বা একেবারেই খেতে না পারা, সব ব্যাপারে নেতিবাচক চিন্তা করা, সাধারণ কাজেকর্মে একেবারেই আগ্রহ না থাকা ইত্যাদি বিষণ্ণতা রোগের প্রাথমিক লক্ষণ।

৪) যে কোনো বয়সের মানুষের মধ্যেই এই বিষণ্ণতা রোগ দেখা দিতে পারে। বয়স কম বলে তার বিষণ্ণতার সমস্যা হতে পারবে না এমন কোনো কথা নেই।

৫) বিষণ্ণতা প্রাথমিক পর্যায়ে থাকলে সাইকোলজিস্টের পরামর্শে তা নিরাময় যোগ্য কিন্তু মাঝারি থেকে মারাত্মক বিষণ্ণতার সমস্যায় অবশ্যই তাকে সঠিক চিকিৎসার মধ্য দিয়ে নিরাময় করতে হবে।

৬) অনেকে মনে করেন বিষণ্ণতা সমস্যা তেমন কোনো সমস্যাই নয়। কিন্তু সত্যিকার অর্থেই বিষণ্ণতা নিয়ে জীবন কাটানো অনেক বেশি কষ্টের যা অন্যেরা বুঝতে পারবেন না। সাধারণ একটি বিষয় চিন্তা করুন, ‘কতোটা হতাশা আপনাকে ঘিরে ধরলে আপনি আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন?’।

৭) বিষণ্ণতা মারাত্মক পর্যায়ে চলে গেলে তা মস্তিষ্কের বড় ধরণের ক্ষতি করে যার ফলে মানুষ মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। মানসিক রোগের প্রধান কারণ হিসেবে ধরা হয় এই বিষণ্ণতাকে।

৮) খুব সামান্য বিষয়ও অনেক গভীরভাবে আঘাত করতে পারে বিষণ্ণতায় আক্রান্ত মানুষকে। কারণ বিষণ্ণতা রোগটি মানুষের আবেগের সাথে জড়িত থাকে। আপনার বলা সামান্য কথাতেই হয়তো তিনি নিয়ে ফেলতে পারেন কঠিন কোনো সিদ্ধান্ত।

-প্রিয়.কম অবলম্বনে