শুভ সকাল ডেস্কঃ পাকিস্তানের কাছে প্রায় ৬০ ঘণ্টা বন্দি থাকার পর দেশে ফেরেন ভারতীয় বিমান বাহিনীর পাইলট উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। তবে পাকিস্তান থেকে দেশে ফিরেও বাড়িতে যেতে পারেননি তিনি। বরং ভারতের গোয়েন্দাদের কাছে কঠিন পরীক্ষা দিচ্ছেন পাইলট অভিনন্দন।
এক সময়ের বিশ্বস্ত যোদ্ধাই এখন ভারতীয় গোয়েন্দাদের কাছে সন্দেহের পাত্র। বিভিন্নভাবে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এমনটাই জানিয়েছে বিভিন্ন ভারতীয় গণমাধ্যম। ভারতীয় বিমান বাহিনীর এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বরাতে ভারতীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদ এবং ডাক্তারি পরীক্ষায় নিজেকে মানসিক ও শারীরিকভাবে সক্ষম প্রমাণ না করতে পারলে, আর কোনদিনই হয়ত যুদ্ধবিমানে উঠতে পারবেন না অভিনন্দন। সে ক্ষেত্রে বাহিনীর অভ্যন্তরীণ কাজ করতে হতে পারে তাঁকে। তবে তাঁর সঙ্গে কোনরকম বৈষম্যমূলক আচরণ করা হবে না। খেয়াল রাখা হবে, কোনও পরিস্থিতিতেই তাঁকে যেন অসম্মানিত হতে না হয়।
ওয়াঘা সীমান্ত থেকে নিজ দেশে প্রবেশের পরই সরাসরি বিমান বাহিনীর গোয়েন্দাদের কাছে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। বেশ কিছু মেডিকেল পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয় অভিনন্দনকে। দেখা হয় তিনি ফিট কিনা।
এখন পরীক্ষা করা হচ্ছে পাকিস্তানি সেনারা অভিনন্দনের শরীরে কোন মাইক্রোচিপ বসিয়েছে কিনা। বিভিন্ন ধরনের স্ক্যানারের মাধ্যমে তা সনা্ক্ত করার চেষ্টা চলছে। কারণ বন্দিদের শরীরে অনেকসময় মাইক্রোচিপ ঢুকিয়ে দেওয়া হয়, যার মাধ্যমে আড়ি পেতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতিয়ে নেয় প্রতিপক্ষ।
এরপর মনোবিদের কাছেও নিয়ে যাওয়া হবে অভিনন্দনকে। বন্দি থাকা অবস্থায় ভারতের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সংক্রান্ত তথ্য হাতাতে শত্রুপক্ষ তাঁকে অত্যাচার করেছে কিনা তা জানার চেষ্টা করা হবে। পাকিস্তানে কোনও ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছে কিনা দেখা হবে তাও।
অভিনন্দনকে জেরা করতে আনা হতে পারে ইনটেলিজেন্স ব্যুরো (আইবি) এবং রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং বার ‘র’ এর কর্মকর্তাদের। তবে সাধারণত পাইলটদের তাঁদের হাতে তুলে দেয় না বিমানবাহিনী। তাই অভিনন্দনের ক্ষেত্রে তা নাও হতে পারে।
পাকিস্তানে পা রাখা থেকে ওয়াঘা সীমান্ত পার করা, গোয়েন্দাদের প্রতি মুহুর্তের সবিস্তার বর্ণনা দিতে হবে অভিনন্দনকে। বন্দি অবস্থায় তাঁর কাছে কী কী জানতে চাওয়া হয়, তা জানাতে হবে তাঁকে। যুদ্ধ বিমানে ওঠা থেকে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে বিমান ভেঙে পড়া পর্যন্ত গোটা ঘটনার পুনর্নির্মাণ করবেন গোয়েন্দারা।
পাক সেনাবাহিনী তাঁর মিগকে নিশানা করতে করে কী ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করেছিল, তাও জানার চেষ্টা করা হবে। তাঁর সঙ্গে থাকা কোন কোন নথি তিনি নষ্ট করতে পেরেছিলেন এবং কী কী নথি পাক সেনার হাতে পৌঁছেছে তারও তালিকা তৈরি করা হবে। চিরপ্রতিপক্ষ পাকিস্তানের হাতে বন্দি ছিলেন অভিনন্দন। সেখানে তাঁকে আপসের কোনও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল কিনা, তাঁকে ব্যবহার করার কোনও চক্রান্ত কোনও করা হয়েছি কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করবেন গোয়েন্দারা। এই গোটা পদ্ধতিকে সামরিক পরিভাষায় বলা হয় ‘ডিব্রিফিং’।