সাহিত্য

রায়হান উল্লাহ’র কবিতা


শিরোনামহীন-১

আশ্চর্য
ক্ষণকাল সময় আক্ষেপে ভুগছি
যখন
চিরকাল সময় আক্ষেপে ধুকছি
সবই আশ্চর্য
মানুষ নগর সভ্যতা সঙ্গে আমিও
আমাদের এতো এতো আক্ষেপ
যখন সময় আক্ষিপ্ত বস্তুই
জানা সবার
চরম হয়ে বাস্তবিক আপেক্ষিক
আপেক্ষিকে আক্ষেপে লাভ কি
সময়ের মতো জীবনও
জীবন ও সময়ের পার্থক্য আছে কি
বাস্তবিক সময়ই তো জীবন
এখানটাতেও অজস্র আক্ষেপ
আক্ষেপের মাঝেই লুকিয়ে প্রেম
আমরাও যে জীবনের প্রেমে
প্রকৃতিরও যে প্রেম এ ভ্রহ্মা-
এতেই যে গোলমাল
ঘুরেফিরে সময় সভ্যতা
নগর মানুষ প্রেম সৃষ্টি
আবারও আক্ষেপ
ফলাফল ধ্বংস
সব চক্রাকার
চলছে তো চলছেই
এই চলার পথে আমি আমরা
ক্ষুদ্র নমস্য
তবুও কেমন বাহার
পরম না হয়েও চলে ভান
আপেক্ষিক আক্ষেপ
সঙ্গে বিক্ষেপ
শুধু থাকে না ক্ষোভ
বিক্ষোভ দূরের বস্তু
আশ্চর্য আমরা
আশ্চর্য নগর
আশ্চর্য সভ্যতা
আশ্চর্য ক্রিয়াকলাপ
আশ্চর্য সময় গাঁথা

শিরোনামহীন-২

নাগরিক কেনাকাটা দেখি
নাগরিক কেনাকাটা করি
নগর দেখি
নাগরিক দেখি
পণ্য দেখি
ক্রয় দেখি
সব মিলিয়ে নিজেকে দেখি
সর্বশেষ প্রকৃতি দেখি
আর কিছু কি দেখা প্রয়োজন?

শিরোনামহীন-৩

কুকুর বিরহে
আরাধনার অনুরাগ

শিহরিত গমন
ভয়ার্ত যাতনায়

বিম্বিত পাওনায়
অফুরান চর্বণ

আরাধনার শীৎকার-
বিরহ হীন

সময়ের বেদন-
যাপিত ললাট
যাতনাই ঠেলে
যাপনের কূলে

মিললেই বিম্বিত-
এখানেই বসবাস
দাঁতের মর্মবাণী
ছেঁড়া সময়ে

সময় ছিঁড়ছি
সময় পড়ছি

ঘুরিয়ে আবার
সময় ছিঁড়ছি

পড়লে ছিঁড়বেই
ছিঁড়লেই আরাধনা

এভাবে চলছে
এভাবেই চলে

সেই থেকে
চলছে…
চলছেই…
চলবে…

শিরোনামহীন-৪

চারপাশে বৈরী বাতাস
ছুটছে হাওয়া গাড়ি
গন্তব্য আগামীর
ছলাকলা ভূলুণ্ঠিত
বিশ্বাসের মন্থনে
কারুকাজের সজ্জায়
বিমূর্ততার অভাববোধ
রকমারি বাহন
ঘূণের লক্ষ্যবস্তু
কীইবা আর মিলে
মূলহীন অর্চণায়
ব্যঙ্গাত্মক ফলাফল
তারপরও যাপন
লক্ষ্যের দিকেই
সব পথ
বিন্দুর বাস্তবতায়
সিনায় সিনায়
তোমারি ঝংকার
বাতাস শনশন
মুকুলের ঘ্রাণে
বর্ষিত আক্ষেপ
সহজ ব্যাপ্তিতে
সযতন বিক্ষেপ
মিটিমিটি কামনায়
রিনিঝিনি নিক্ষেপ
চর্বিত সীমানায়
আচমকা ভ্রƒক্ষেপ
গোধূলির সীমারেখায়
সব সুরে
কামনার প্রতিধ্বনি
তখনই বাতাস
লুটিয়ে ঝাপটায়
মেঘের দেশে
অফুরান কাল
তারপর…
তার আর পর নেই…
আলো…
লুটালো…

 

নায়িকারা কি জানে?

নায়িকারা কি জানে
সময়ের বাঁকে খোঁজ চলে
কেমন তাদের হালচাল
সময় কোথায় কার হয়ে যায়
মুখের রেখার ত্রিকোণমিতি
কিছুই দৃষ্টি এড়ায় না

কাজ ও সঙ্গহীনের
কর্তব্য এমনই
বুঝলাম মানলামও
বুঝানো যায়নি

সময় গড়িয়ে যায়
দূরত্ব ব্যাকুল
পালিতর দায়িত্ব
ঠেকায় সব বর্ণহীন
ঠেকেছি ঠেকি রূপ ভিন্ন

ভালোবাসায় ঠকতেও হয়
এখানটাই সহমত
তাইতো নিখোঁজ

বৃষ্টি ভাবনা

রিমঝিম বৃষ্টি
ফুটপাথী সজ্জা
রিমঝিমই বাজে
বাজানোতেই সই

ভিন্ন দৃশ্যপটে
হাওয়াই গড়াগড়ি
কাঠিন্য সাজে
বাজানোই কি নয়

বাজান সাজান
গহন আধান

আধানের যুক্তি
বাজানোর চুক্তি

চুক্তি অনুসারে
যুক্তি অভিসারে

চুপিসার…
অভিসার…

রিমঝিম সরবে
সুরলিত গরবে

গরব চুষে
গরব পিষে
সাদার আশে
কালোর পাশে

আলো হাসে
আলোই হাসে

বিমূর্ত শীৎকার

নগর ও মানুষ অক্সিজেনে দীর্ঘায়ু
কী লিখব প্রেমের সংলাপ
তবুও লিখতে হবে
হাত পাতা চারপাশ
মেলে ঢঙ্গালাপ
ঘোঙ্গানির বিমূর্ত শীৎকার
বিচ্ছিন্ন মায়াটান
উচাটন মায়া গেঁথে
হাওয়াগাড়ির গোধূলি ভেদ
কায়াচর শিকড় ছেদে
ছায়ারেখাই ঠিকুজি
দোদুল্যমান বাহনে
বিশ্বাসের বোঝাপড়া
বর্ষণাহত এপিটাফ
তোমার তরে…

জীবনের মানে

মাঝরাতের নীরবতা ভাঙছে
বৃষ্টির ক্ষুদ্র জলকণা
আর মেঘের গুরুগুরু ডাক

কতোটা জল ভূমিতে গড়ালে
আকাশ হেসে উঠে
তা কেউ জানে না

কতোটা ভুল সময় পেরোলে
মানুষ হয়ে যায় নির্বাক
আমি তো বুঝি না

অনেক আশার গাঁথুনির মালা
এ জীবন
ভুল পথে বৃথাই মানুষের
জীবন অন্বেষণ

একান্ত

ইয়ত্তাহীন অনেক কিছুই
হারিয়ে গেছে
বেধের ভাবনায়
অন্তরালে থাকে সবই
সুদূরের ছায়ায়
ছায়া-কায়া একাকার
অস্পৃশ্যকে ছোঁয়াই
রূপেই মাতালো পাখি
হেই হারাই
অস্পৃশ্যে তোমাতে ডানা
তোমার সুরে মেলাই
নীলিমার নীলে গেছি
চন্দ্রাহত হয়েছি
তোমাকে পাবার আশায়
তাতেই ফলাফল
বিপরীতে কোলাহল
সরব মাতোয়ারা
ইঙ্গিত ইশারা
জেনেই তোমাতে যাওয়া
অস্পৃশ্যে তোমাকে পাওয়া
কুঁড়ানো যত
তাই একান্ত

জীবন-১

এক রহস্যের বেড়াজালে
আটকে যাবার নাম জীবন
রহস্য রহস্যই থেকে যায়
তখন দেখি দুয়ারে দাঁড়িয়ে মরণ
তবে কেন আসা যাবার মেলা
প্রকৃতির সৃষ্টি ও ধ্বংসের খেলা