আপনি জানেন কি, বুকে ব্যথা অনুভব না করলেও ‘হার্ট অ্যাটাক’ হতে পারে? হৃদযন্ত্রের রোগগুলো সবার ক্ষেত্রে একই লক্ষণ প্রকাশ করেনা।
হার্ট অ্যটাকের লক্ষণগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. মোহাম্মদ আব্দুর রহমান।
তিনি বলেন, “কয়েকটি বিষয় হার্ট অ্যাটাকের কারণ হতে পারে যেমন: বয়স, বংশগত কারণ, উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টোরল, বাড়তি ওজন, বাজে খাদ্যাভ্যাস, মদ্যপান, দুশ্চিন্তা এবং শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা।”
তিনি আরও বলেন, “সাধারণত হার্ট অ্যাটাকের আগে রোগীরা মৃদু বদহজম অনুভব করেন। এই কারণে বদহজমের সমস্যা আছে এমন বয়স্ক মানুষের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণগুলো দেখা গেলে তা সাধারণত বুক জ্বালাপোড়া বা অন্যান্য খাবার-বিষয়ক সমস্যা মনে করে অবহেলা করা হয়।”
“সাধারণ বুক জ্বালাপোড়ার সঙ্গে যদি বদহজম ও পাকস্থলি শক্ত হয়ে যায়, তাহলে বুঝতে হবে আরও কোনো গোলমাল বেঁধেছে। আর বদহজম বা গ্যাসের সমস্যা হলে যদি গ্যাসের ওষুধ খেয়ে ব্যথা উপশম না হয় তবে বুঝতে হবে হৃৎপিণ্ডের সমস্যা আছে।” বললেন এই চিকিৎসক।
শরীরের ভাষায়, ক্লান্তি এবং শ্বাস-প্রশ্বাস ছোট হয়ে আসার অর্থ হচ্ছে তার বিশ্রাম প্রয়োজন। পাশাপাশি হৃৎপিণ্ডে বাড়তি চাপ পড়ার কারণে এটি হৃৎপিণ্ডের সমস্যার লক্ষণও হতে পারে।
আব্দুর রহমান বলেন, “যদি প্রায়ই কোনো কারণ ছাড়া ক্লান্তি অনুভব করেন তাহলে বুঝতে হবে কোথাও কোনো ঝামেলা হচ্ছে।”
ক্লান্তি এবং নিঃশ্বাস ছোট হওয়া নারীদের ক্ষেত্রে খুবই সাধারণ লক্ষণ এবং হার্ট অ্যাটাকের কয়েক মাস আগ থেকেই তা শুরু হতে পারে। সামান্যতম হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা চোখে পড়লে আপনি বা আপনার আশপাশের যে কারো উচিত হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করা।
আব্দুর রহমান বলেন, “শরীরের অন্যান্য অংশেও ব্যথা এবং শক্ত হয়ে যাওয়ার উপসর্গ দেখা যেতে পারে। রোগীদের একটি বড় অংশ বাম হাতে ব্যথা হওয়ার কথা বলেন। আরও বলেন, ব্যথাটা বাম কাঁধ থেকে বাম হাতের আঙুল পর্যন্ত চলে যাচ্ছে। তবে শরীরের অন্যান্য স্থানেও যেমন, পেট, পিঠ, গলা, কাঁধ, দাঁত কিংবা থুতনিতেও ব্যথা হতে পারে।”
“শারীরিক কার্যকলাপ কিংবা শরীরচর্চা না করার পরেও স্বাভাবিকের তুলনায় অতিরিক্ত ঘাম হওয়াও হার্ট অ্যাটাকের পূর্বলক্ষণ। হৃৎপিণ্ডের বন্ধ হয়ে যাওয়া রক্তনালীগুলোর মধ্য দিয়ে রক্ত প্রবাহিত করতে হৃৎপিণ্ডের প্রচুর কসরত করতে হয়। এসময় শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখতে ঘাম বেশি হয়। বিশেষ করে রাতের বেলা বেশি ঘাম হওয়া নারীদের ক্ষেত্রে হৃৎযন্ত্রের সমস্যার একটি সাধারণ কারণ।”
তাই উপরের যেকোনো লক্ষণগুলো দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেন ডা. আব্দুর রহমান।
– বিডিনিউজ২৪.কম অবলম্বনে