শুভ সকাল ডেস্কঃ বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট স্টেডিয়াম মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড। এটি অষ্ট্রেলিয়ার মোলবোর্নের ইয়ারা পার্কে অবস্থিত। ১৮৫৩ সালে স্টেডিয়ামটি স্থাপিত হয়। লক্ষাধিক আসনের দর্শক ধারণ ক্ষমতাবিশিষ্ট স্টেডিয়ামটি ১৯৫৬ সালের গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকের প্রধান স্টেডিয়াম হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল। ১৮৫৩ সালে মেলবোর্ন ক্রিকেট ক্লাব কর্তৃপক্ষ এলাকাটিকে ক্রিকেট খেলার উদ্দেশ্যে সর্বপ্রথম ব্যবহার করতে শুরু করে। উপরিভাগ ঘাস দিয়ে আবৃত ডিম্বাকৃতির এই মাঠটির আয়তন ১৭১ মিটার x ১৪৬ মিটার। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড নির্মাণে খরচ হয়েছিল ৪৬ কোটি মার্কিন ডলার।
১৮৭৭ সালে এখানেই ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম টেস্ট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে ৪৫ রানে জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। আর ১৯৭১ সালে এই মাঠে প্রথম এক দিনের আন্তর্জাতিক খেলা অনুষ্ঠিত হয়। সে ম্যাচেও জয় তুলে নিয়েছিল অজিরা। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মেলবোর্নে তাদের সর্বশেষ জয় ২০১৩ সালে বক্সিং ডেতে। টেস্ট ম্যাচে রেকর্ড ৯১ হাজার ১১২ জন দর্শক ছিলেন সেদিন। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডের দর্শক ধারণক্ষমতা এক লাখ ২৪ জন। প্রতিবছর ৩৫ লাখ দর্শক এই মাঠে খেলা দেখতে আসে। বিশ্বের অন্যতম সুন্দর স্টেডিয়াম ও বহু ক্রিকেট ইতিহাসের সাক্ষী।
২০২০ সালে অনুষ্ঠিতব্য নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ফাইনাল ম্যাচমেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত হবে। আইসিসি জানিয়েছে, ২০২০ সালের ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসে নারীদের ফাইনাল ম্যাচটি অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে নারীদের কোন ইভেন্টে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক দর্শক উপস্থিতির রেকর্ড ছাড়িয়ে যেতে পারে। এর আগে ১৯৯৯ সালের নারী বিশ্বকাপ ফুটবলে নারীদের কোন ইভেন্টে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক দর্শক উপস্থিতির রেকর্ড গড়েছিল। ক্যালিফোর্নিয়ার রোস বোল স্টেডিয়ামে যুক্তরাষ্ট্র ও চায়নার মধ্যকার ফাইনাল ম্যাচটি দেখতে ৯০ হাজার ১৮৫জন দর্শক মাঠে উপস্থিত ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে এক লাখ ধারণক্ষমতা সম্পন্ন মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড সেই রেকর্ড ভাঙ্গতে যাচ্ছে। নারীদের পাশাপাশি পুরুষদের ফাইনালও মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত হবে। দুটি ম্যাচকেই সমান দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার তাগিদেই আইসিসির এ উদ্যোগ। যদিও দুটি টুর্নামেন্ট দুই সময়ে অনুষ্ঠিত হবে। ২০২০ সালের মার্চে নারীদের ও ছয়মাস পরে পুরুষদের বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবার কথা রয়েছে।
মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড ট্রাস্টের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। উইলিয়াম হেইন্স উক্ত ট্রাস্টের প্রথম সভাপতি ছিলেন।ক্রিকেটর জন্য সবচেয়ে বড় হলেও, বিশ্বের দশম সর্ববৃহৎ স্টেডিয়াম হিসেবে এর পরিচিতি রয়েছে। এছাড়াও এটি অস্ট্রেলিয়ার সর্ববৃহৎ স্টেডিয়াম।
আন্তর্জাতিকভাবে এমসিজি ১৯৫৬ সালের গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক এবং ২০০৬ সালের কমনওয়েলথ গেমসের জন্য স্মরণীয় হয়ে আছে। খোলা ও উন্মুক্ত স্টেডিয়াম এমসিজি বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ক্রিকেট মাঠ হিসেবে পরিচিত।
অন্যান্য বৃহৎ আকৃতির ক্রীড়া হিসেবে অস্ট্রেলিয়ান ফুটবল লীগ, রাগবি ইউনিয়ন, রাগবি লীগ, ফিফা বিশ্বকাপ বাছাই-পর্বসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচের আয়োজন করা হয়। মেলবোর্ন ম্যারাথনের শেষ রেখা ও বড় আসরের রক কনসার্টের আয়োজন করা হয় এখানে। তবে মেলবোর্নকে পেছনে ফেলে, বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট স্টেডিয়াম নির্মাণের কাজ শুরু হতে যাচ্ছে ভারত। আহমেদাবাদে যে স্টেডিয়াম নির্মাণ হতে যাচ্ছে, তা এমসিজির চেয়েও বেশী দর্শক ধারণ করবে। গুজরাট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের দেয়া তথ্য মতে, প্রায় এক লাখ ১০ হাজার দর্শক খেলা দেখতে পারবে এই স্টেডিয়ামে। স্টেডিয়ামটি নির্মাণ করতে খরচ হবে ৭০০ কোটি রুপি। আর মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড নির্মাণ করতে খরচ হয়েছিল ৪৬ কোটি মার্কিন ডলার।