বিনোদন

তারা কেউ ভারতীয় নন!


বলিউডে পচ্ছন্দের তারকাদের বেশ কয়েকজন ভারতীয় নন৷ শুনে অবাক লাগছে? লাগতেই পারে৷ কিন্তু কথাটা সত্যি৷ কীভাবে এই তথ্য জানা গেল? আসলে হালের লোকসভা ভোটে টিনসেল টাউনের অনেক নক্ষত্রই ভোট দিতে আসেননি৷ এই ভোট না-দেওয়ার কারণটা কী? তা খুঁজতে গিয়েই ‘কেঁচো খুঁড়তে সাপ’৷ মোদ্দা কথাটা হলো, ভোট না দেওয়া অনেক তারকারই আসলে ভারতে ভোটাধিকার নেই৷ কারণ, তারা ভারতীয় নাগরিকই নন৷ ভাবুন একবার, পর্দায় এরাই রোমান্সে, প্রেমে, অ্যাকশনে এ-দেশের স্কুল-কলেজ পড়ুয়া থেকে ভারতের একটা বড় অংশকে প্রভাবিত করেন৷ অথচ, বছরের পর বছর কেটে গেলেও এরা নিজেদের বিদেশি নাগরিকত্ব বদলাননি৷ হাতছাড়া করেননি বিদেশি পাসপোর্টটিও৷ এতখানি পড়ে হয়তো সানি লিওনের কথাই ভাববেন৷ অনেকেই বলবেন মার্কিন নাগরিক হয়ে সানিই এখানে রমরমিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন৷ কিন্তু শুধু সানিই না৷ এই তারকা তালিকায় অনেকেই রয়েছেন৷ যারা এ-দেশে বিপুল বহরের অর্থ রোজগার করছেন, নাগরিক হিসেবে নয়, ‘ওয়ার্ক পারমিট’-এর মাধ্যমে৷

আলিয়া ভাট
বৃটেনের নাগরিক৷ সেই হিসেবে বৃটিশ৷ নির্বাচনের সময় অনেকেই বলেছিলেন, আলিয়া ভোট দিতে পারেননি তার বয়স কম বলে৷ কিন্তু সত্যিটা হলো, এক বৃটিশ পাসপোর্টের অধিকারিণী কীভাবে এদেশে ভোট দিতে পারেন! আলিয়া অনেকদিনই বলে আসছেন, পাসপোর্ট বদলে এ-দেশের ভোটার কার্ড সংগ্রহ করবেন৷ কিন্তু এখনও সেটা হয়ে ওঠেনি৷ এবারও তিনি বলেছেন তিনি ‘ডুয়াল সিটিজেনশিপ’ বা দ্বৈত নাগরিকত্ব নেবেন৷ কথা হলো, ভারতে যে ডুয়াল সিটিজেনশিপ ব্যবস্থা চালু নেই৷

আলিয়া উবাচ: আমি ভোট দিতে চাই৷ আগামী নির্বাচনের আগেই আমি দ্বৈত নাগরিকত্বের ব্যবস্থা করে ফেলবো৷

ইমরান খান
ইমরান খানের বাবা একজন বঙ্গসন্তান৷ তিনি আমেরিকায় থাকেন৷ নাগরিকত্বও মার্কিন মুলুকের৷ সিলিকন ভ্যালির বাসিন্দা পিতা অনিল পালের পদবি অবশ্য ইমরান ব্যবহার করেন না৷ ব্যবহার করেন মায়ের পদবি৷ ইমরানের জন্ম আমেরিকার উইসকনসিনের ম্যাডিসনে৷ সুতরাং পিতার সূত্রে এবং জন্মস্থানের নিরিখে তিনি একজন মার্কিন নাগরিক৷ ইমরানও দীর্ঘদিন ধরে ‘ভারতীয়’ হওয়ার কথা বলে আসছেন৷ যদিও বাস্তবে ভারতীয় পাসপোর্ট নেওয়ার কোনও উদ্যোগ তার মধ্যে দেখা যায়নি৷

ইমরান উবাচ: আমার পাসপোর্ট আমেরিকার, এটা সত্যি৷ আসলে এটা বদলানোর সময় আমি পাইনি৷

নার্গিস ফকরি
এর কাহিনিতে বেশ বড়সড় ট্যুইস্ট রয়েছে৷ নার্গিস যে শুধু ভারতীয় নন, তাই নয়, এর সঙ্গে ভারতের কোনো যোগসূত্রই নেই৷ চমকদার তথ্যটি হলো, নার্গিস ফকরি জন্মসূত্রে পাকিস্তানি৷ নার্গিসের মা চেক প্রজাতন্ত্রের নাগরিক৷ বাবা পাকিস্তানের৷ নার্গিসের জন্ম হয়েছিল মার্কিন মুলুকের নিউ ইয়র্কে, তার পাসপোর্টটিও আমেরিকার৷

নার্গিস উবাচ: স্টেটসে আমার পরিবারকে আমি খুব মিস করি৷ ছুটি কাটাতে অবশ্য মাঝেমধ্যে আমি সেখানে যাই৷

ক্যাটরিনা কাইফ
অনেকেই হয়তো এই নামটা আন্দাজ করে ফেলেছেন৷ পাসপোর্টে ক্যাটরিনার নাম লেখা রয়েছে ক্যাথেরিনা তুরকোত্তে৷ এর জন্ম হংকং-এ৷ আর পাসপোর্টের নিরিখে তিনি বৃটিশ নাগরিক৷ ইউকে-তে ক্যাটরিনার বাড়ি রয়েছে৷ তার বোনেরাও বিদেশেই রয়েছেন৷ কথা হলো, ক্যাটরিনার পিতৃপরিচয় সেভাবে প্রকাশ্যে আসেনি৷ আর তার যে সাত বোনের কথা জানা যায়, তারা সম্ভবত সৎ-পিতার ঔরসজাত৷ এই বোনেদের কয়েকজন আবার সোনালি চুলের৷

ক্যাটরিনা উবাচ: আমি ভারতে কাজ করি৷ এখানে কাজ করার অনুমতিও রয়েছে আমার৷ এ-দেশের নিয়মনিষ্ঠ করদাতাদের মধ্যে আমিও একজন৷

জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজ
বড় হয়েছেন বাহরাইনে৷ যদিও তার দাবি, তিনি শ্রীলঙ্কা বংশোদ্ভূত৷ এও জানা গিয়েছে, তার পূর্বসূরীরা (বাবার দিকে) নাকি গোয়ার মানুষ৷ আর মা কানাডা-মালয়েশিয়া মিশ্র রক্তের৷

জ্যাকলিন উবাচ: আমি শ্রীলঙ্কায় ব্যবসা করতে চাই৷ সেখানে আমার দুর্দান্ত একটা বাড়ি আছে৷

আরও ‘ভিনদেশি তারা’
ইভলিন শর্মা: জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টে জন্ম৷ পড়াশোনা বৃটেনে৷

আলি জাফর: পাকিস্তানের নাগরিক৷

অ্যামি জ্যাকসন: ২০১০ সালে মিস ইংল্যান্ড হয়েছিলেন৷

সানি লিওন: আমেরিকা এবং কানাডার নাগরিকত্ব৷

ইয়ানা গুপ্তা: আদতে পূর্বতন চেকোস্লোভাকিয়ার৷

-নতুন বার্তা অবলম্বনে