এভিয়েশন

সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে অচল বরিশাল বিমানবন্দর


দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র বরিশাল বিমানবন্দরে রানওয়ে লাইটিং না থাকায় ঝুঁকির পাশাপাশি সব ধরনের বাণিজ্যিক ফ্লাইট পরিচালনাও ব্যাহত হচ্ছে। দীর্ঘদিনেও বরিশাল বিমানবন্দরের যথাযথ আধুনিকায়ন ও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। সাত মাস আগে বরিশালে বিমান ফ্লাইট উদ্বোধনকালে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী এ বিষয়টি যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে বলে জানান। এরই ধারাবাহিকতায় রানওয়ে লাইটিংসহ আরও কিছু আধুনিকায়ন কাজে সরকারের কাছে ৫ কোটি টাকার একটি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়। তবে এখনও এ বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বিমানবন্দরের জন্য রানওয়ে লাইটিং অতি জরুরি স্থাপনার বিষয়টি এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে বলে জানান বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক হানিফ গাজী। তবে শিগগির টেন্ডারের মাধ্যমে রানওয়ে লাইটিং স্থাপনের কাজ সম্পন্ন করা হবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
দীর্ঘ টানাপোড়েন কাটিয়ে বাংলাদেশ বিমানসহ বেসরকারি বিমানের ফ্লাইটও চলছে এ বিমানবন্দরে। প্রায়ই নামছে নানা প্রশিক্ষণ বিমান। কিন্তু জেগে ওঠা বরিশাল বিমানবন্দর এখনও অনেকাংশই অরক্ষিত। আছে নানা অব্যবস্থাপনা। সিভিল এভিয়েশন অথরিটির নিয়মানুযায়ী সন্ধ্যা সোয়া ৬টার পর বরিশাল বিমানবন্দও থেকে সব ধরনের ফ্লাইট অপারেশন বন্ধ থাকার কথা। কিন্তু দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ও যাত্রীদের ব্যাগেজ উঠাতে-নামাতে প্রায়ই সন্ধ্যা হয়ে যায়। এছাড়া আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে রানওয়ে এলাকা আগেভাগেই কিছুটা অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে আসে। আর সন্ধ্যা নামলেই অন্ধকারে অচল হয়ে পড়ে বিমানবন্দরটি। গোটা বিমানবন্দরে নিরাপত্তা প্রাচীর না থাকা, পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা, স্ক্যানিং মেশিন না থাকাসহ নানা সংকট বিরাজ করছে।
বিমান সংশ্লিষ্টরা আশংকা করছেন, বিমানবন্দর এভাবে অরক্ষিত থাকলে যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এসব সমস্যা সমাধানে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানান বন্দরের ব্যবস্থাপক হানিফ গাজী। এছাড়া সীমানা প্রাচীরের সংস্কার কাজ ইতিমধ্যে শুরু করা হয়েছে।
বেসরকারি বিমান সংস্থা ইউএস বাংলার বরিশাল ইনচার্জ রিয়াদ হোসেন বলেন, বর্তমানে পাঁচ দিন বরিশাল বিমানবন্দরে বিমান অবতরণ করছে। কোনো কারণে বিমানের শিডিউল মিস করলে সন্ধ্যায় আর অবতরণ করা যাচ্ছে না। কারণ রানওয়েতে আলোর স্বল্পতা। রানওয়েতে ছোট ছোট প্রচুর লাইট স্থাপন করা জরুরি। বন্দরের নিরাপত্তাও জোরদার করা দরকার। এছাড়া অটো ব্যাগেজ বেল্ট, স্ক্যানিং মেশিন, বাউন্ডারি দেয়াল সম্পন্ন করা দরকার।
বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্সের বরিশাল জেলা ব্যবস্থাপক খলিলুর রহমান বলেন, বরিশাল বিমানবন্দরে আলোর স্বল্পতা অন্যতম সমস্যা। বিমানবন্দরে দিনরাত এয়ারক্রাফট নামবে এটাই নিয়ম। কিন্তু এখানে রাত নামলেই কার্যক্রম অচল হয়ে পড়ে। আলোর স্বল্পতার জন্য দুর্ঘটনার আশংকা থেকেই যাচ্ছে। তিনি বলেন, বরিশাল বন্দরে স্ক্যানিং মেশিন নেই। যে কেউ বোমা নিয়ে বিমানে উঠে প্রাণহানি ঘটাতে পারে। ফায়ার সার্ভিস ও অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস পর্যাপ্ত নয়। গরু-ছাগল রানওয়েতে ছুটে বেড়ায়।
বরিশাল-৩ আসনের সংসদ সদস্য শেখ টিপু সুলতান বলেন, বিমান আলোর স্বল্পতার কারণে অবতরণ করতে না পারায় বিষয়টি বেসামরিক বিমান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী রাশেদ খান মেননকে অবহিত করেছি। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন। আশা করি দ্রুত রানওয়েতে আলোর ব্যবস্থা করা হবে।

-aviationnews.com.bd  অবলম্বনে