আন্তর্জাতিক

তীব্র গরমে পাকিস্তানে নিহতের সংখ্যা ৭০০ ছাড়িয়েছে


পাকিস্তানে দাবদাহে নিহতের সংখ্যা ৭০০ ছাড়িয়েছে।

মঙ্গলবার সকালে সরকারি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে দেশটির গণমাধ্যম জানায়, নিহতের সংখ্যা চার শতাধিক। মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে, সন্ধ্যা নাগাদ সেই সংখ্যায় যোগ হয়েছে আরো ৩০০ জন।

পাকিস্তানের ঐতিহ্যবাহী ও প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শনবহুল জনপদ সিন্ধু প্রদেশে তীব্র তাপ প্রবাহে এবং অসহনীয় দাবদাহে এসব প্রাণহানি হয়েছে। অন্য কোনো প্রদেশে দাবদাহে কেউ নিহত হয়নি।

মঙ্গলবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ পরিস্থিতি মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থা কর্তৃপক্ষ (এনডিএমএ) জানিয়েছে, তারা প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের কাছ থেকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ পেয়েছে।

হিট-স্ট্রোক সেন্টার এবং এনডিএমএ-কে সহযোগিতার জন্য সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।

চার দিন ধরে সিন্ধু প্রদেশের রাজধানী ও বন্দর শহর করাচিতে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের (১১৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট) কাছাকাছি তাপমাত্রা অব্যাহত রয়েছে। মাঝে মধ্যে তাপমাত্রা ৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছাচ্ছে।

সিন্ধু প্রদেশের স্বাস্থ্য সচিব সাইদ মাংনেজো জানিয়েছেন, চার দিনে দাবদাহজনিত রোগে করাচির সরকারি হাসপাতালগুলোতে মারা গেছেন ৬১২ জন। এ ছাড়া শহরের বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে নিহত হয়েছে ৮০ জন।

হাসপাতালে নিহতের সংখ্যা হিসাবে থাকলেও গ্রামাঞ্চলে হিট-স্ট্রোকে কতজন নিহত হয়েছে, তা সঠিকভাবে জানা যায়নি। তবে হিট-স্ট্রোকে যারা নিহত হয়েছে, তাদের মধ্যে অধিকাংশ করাচি শহর ও এর আশপাশের বাসিন্দা।

পাকিস্তানের গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, দাবদাহে হিট-স্ট্রোক ও অন্যান্য কারণে যারা নিহত হয়েছে, তারা বেশির ভাগ গরিব পরিবারের লোক। নারী ও শিশুও মারা গেছে। তবে দাবদাহে বয়স্ক লোকেরা মরেছেন বেশি।

নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অনেকের অবস্থা ভালো নয়।

তীব্র গরমে যখন হাসফাস করছে মানুষ, তখন দেখা দিয়েছ চরম লোডশেডিং। এদিকে রোজাদাররাও কষ্ট পাচ্ছেন। বিদ্যুৎ ঘাটতির জন্য শীতাতপ ব্যবস্থা বাড়নোরও উপায় নেই।

অন্যদিকে আরেকটি কথাও বারবার বলা হচ্ছে গণমাধ্যমে। তা হলো- উচ্চ তাপমাত্রা পাকিস্তানে অস্বাভাবিক, অজানা কিছু নয়। প্রতি গ্রীষ্মে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির কাছাকাছি থাকে। কিন্তু এবার চরম লোডশেডিং ও বিদ্যুৎ বিচ্ছন্ন অবস্থা পরিস্থিতি খারাপ করে ফেলেছে। কোথাও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নেই। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে।

করাচির কোনো কোনো জায়গায় বিক্ষুব্ধ জনতা বিদ্যুতের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে। বিদ্যুৎ সরবরাহে ব্যর্থতার জন্য তারা করাচির প্রধান বিদ্যুৎ ব্যবস্থাকেন্দ্র কে-ইলেকট্রিসিটিকে দায়ী করেছে।

তথ্যসূত্র : বিবিসি, ডন ও এক্সপ্রেস অনলাইন।

রাইজিংবিডি  অবলম্বনে